দ্বিতীয় বর্ষ, দ্বিতীয সংখ্যা
বাঙালির মুদ্রণ-সংস্কৃতির বিকাশ ও অগ্রগতির সাক্ষী ছোটো পরিসরে ছাপা বিশেষ কোনো একটি বিষয় নির্ভর পুস্তিকাগুলি। কখনও সামান্য বিনিময় মূল্যে বা অনেক সময় বিনামূল্যে বিতরণ করা হত এই পাতলা বইগুলো। বিষয়বৈচিত্র্যে অনন্য এগুলির পরিসর ছিল শিক্ষা থেকে রাজনীতি, জাতপাতের কথা থেকে সংগীত, ধর্মপ্রচার থেকে রঙ্গতামাশা, নীতিকথা থেকে কেচ্ছাকাহিনি, স্মৃতিকথা থেকে বিজ্ঞাপনবার্তা প্রভৃতি নানা দিগন্তে বিস্তৃত। ...
মুঠোফোন-বিপ্লব আর বিশ্বায়ানের আগে গত শতকে জন্মানো প্রায় সব বাঙালিরই আঁক কষতে শেখার পর পড়া প্রথম বইটি কিন্তু একটা ফিনফিনে মলাটের পুস্তিকা—বিদ্যাসাগরমশাইয়ের বর্ণপরিচয়-এর প্রথম ভাগ৷ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যাওয়ার সময় নাকি পালকিতে বসেই শিশুশিক্ষার প্রয়োজনে বইটা লিখে ফেলেছিলেন তিনি৷ স্বর-ব্যঞ্জন শিখতে-শিখতেই সুবোধ গোপাল নয়, দুষ্ট রাখালের মতো আচরণের জন্য সে-বই ছিঁড়ে যেত৷
এরপর কম-বেশি প্রত্যেকেরই বাড়িতে এসেছে কিছু-না-কিছু পাতলা বই, যার কোনোটাই, আমাদের অনেক ‘নেই’-এর মতো, আজ আর কাছে নেই, সেঁধিয়ে গেছে বিস্মৃতির গর্ভে৷ আসলে শীর্ণ চেহারা, জ্যালজেলে মলাট, দায়সারা ছাপা ইত্যাদি নানা কারণে পাঠকদের অধিকাংশই এই ধরনের চটি বইকে সেভাবে গুরুত্ব দেননি৷ কিন্তু বিষয়বৈচিত্র্যে অতুলনীয় রোগা-পাতলা কেতাবগুলোয় থাকত শিশুপাঠ্য বিষয় থেকে জাতি কোঁদল, ধর্ম থেকে জ্যোতিষ, কুলজি থেকে কারিকা, চিকিৎসা থেকে বিজ্ঞান, পারিবারিক ইতিহাস থেকে শোকগাথা—কী নয়!
মূলত এই পাতলা বইগুলির লক্ষ্য ছিল জ্ঞাপনধর্মী, সৃজনমূলক নয়৷ এই জানান দেওয়ার কাজটি যখন সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরা সহজ হয়ে যায় তখন থেকে কমতে থাকে পুস্তিকা প্রকাশের ণেউ৷ আর এখন প্রচার মাধ্যমে রীতিমতো বিপ্লব হয়ে যাওয়ার পর বৈদ্যুতিন সভ্যতায় মনের কথা জানাতে, প্রতিবাদ ভাষা তুলে ধরতে কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানের জরুরি খবর চটজলদি পৌঁছে দিতে লাগে না কোনো কাগজ-কলম অথবা ছাপাছাপি৷ মুঠোফোনের বোতাম টিপে নিমেষেই তার পাঠানো যায় সকলের কাছে৷
তা-ও পুস্তিকা গুরুত্ব হারায়নি, কারণ এর ঐতিহাসিক মূল্য অসীম৷ রামমোহন বা বিদ্যাসাগর যেমন সমাজ-সংস্কারের লক্ষ্যে পুস্তিকা লিখেছেন, তেমনই বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে (তখন পূর্ব পাকিস্তান) ১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭-এ প্রকাশিত হয়েছিল একটি পাতলা বই পাকিস্তানের রাষ্ট্র-ভাষা বাংলা—না উর্দু? এমন আরও উদাহরণ আছে৷ কিন্তু সমস্যা সহজে এসব বই পাওয়াটাই দুষ্কর৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিশেষ কিছু লাইব্রেরি বা ব্যক্তি-সংগ্রহে সাধারণভাবে লুকিয়ে থাকা সমাজের এই মূল্যবান দলিলকে আরেকবার সকলের সামনে তুলে ধরাই এই সংখ্যার লক্ষ্য৷
তবু জানিয়ে রাখা ভালো, পুস্তিকার বিপুল বৈচিত্র্যময় সংসারের সব কিছু এই সীমিত পরিসরে তুলে ধরা কার্যত অসম্ভব৷ যা আলোচনার বাইরে রয়ে যাবে তা, আশা রাখি, সন্ধানী পাঠক উৎসাহী হবেন ভবিষ্যতে তত্ত্বতালাশ করতে৷
প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০১৯
প্রচ্ছদ ও শিল্প-নির্দেশনা: সোমনাথ ঘোষ
সম্পাদক: সৈকত মুখার্জি
পুস্তিকা: উদ্ভব-বিস্তারের আদিপর্ব
বরুণ চট্টোপাধ্যায়
পুস্তিকা নিয়ে প্রক্ষিপ্ত ভাবনা
তরুণ পাইন
বাংলা পুস্তিকা: একান্ত আপন
সুধীর চক্রবর্তী
লেখা আছে পুস্তিকার পাতে
দেবাশিস বসু
উনিশ শতকের পুস্তিকায় পতিতোদ্ধার
অশোক উপাধ্যায়
রবীন্দ্রনাথের চিত্রপ্রদর্শনী সংক্রান্ত দুটি পুস্তিকা
সত্যশ্রী উকিল
...রেসের বইও বেশ বনেদি
ধ্রুবজ্যোতি নন্দী
‘পুলিশ ঘাটের হত্যাকাণ্ড’ এবং ...
অরিন্দম দাশগুপ্ত
স্মারক পুস্তিকার আলোয় সেকালের অভিনয়
গৌতম বসুমল্লিক
প্রান্তিক পুস্তিকায় চোদ্দো আইন
উৎপল চক্রবর্তী
‘প্রমিতি’: প্রতিটা পাতাই গ্রাফিক শিল্প
অসিত পাল
কয়েকটি চটি বইয়ের গল্প
সত্যশ্রী উকিল
বাংলা ধর্মপুস্তিকায় বাঙালির ধর্মভাবনা
কৃষ্ণপ্রিয় দাশগুপ্ত
কয়েকটি অপরিচিত ব্রাহ্ম-পুস্তিকা
অর্ণব নাগ
‘চটি’তং-‘জাত’ক: পুস্তিকায় জাতপাত
সুমন ভট্টাচার্য
শিল্প-পুস্তিকার হরেকরকম্বা
কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত
বিজ্ঞান-পুস্তিকা: বুনো ফুলের সৌরভ
প্রকাশ দাস বিশ্বাস
নীহার প্রেসের পুস্তিকা সম্ভার
শ্যামল বেরা
ভ্রমণ-পুস্তিকায় ‘দেশে-দেশান্তরে’
প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
রেল-পুস্তিকা: ইতিহাসের সাক্ষী
দেবাশিস বসু
উনিশ শতকের একটি জার্মান পুস্তিকা এবং কয়েকটি বঙ্গীয় কিশোরের কাহিনি
দেবাশিস মুখোপাধ্যায়
ছোটো পরিসরে বিচিত্র সমাজচিত্র
সৈকত মুখার্জি
কালির কথা
অসিত পাল
গ্রাহক হোন
হরপ্পার গ্রাহক হতে গেলে বছরে তিনটি সংখ্যার জন্য মোট পাঁচশো টাকা দিতে হয়। (ডাকমাশুল আলাদা)
যোগাযোগ করুন ই-মেলে অথবা ফোনে কথা বলুন।
সরাসরি প্রাপ্তিস্থান
• হরপ্পার পরিবেশক পশ্চিমবঙ্গে অক্ষর প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলকাতা-৯ ও বাংলাদেশে বাতিঘর।
• কলেজস্ট্রিটে পাতিরাম, ধ্যানবিন্দু, দেজ, দে বুকস্টোর, উল্টোডাঙায় সুনীলদার দোকান, রাসবিহারী মোড়ে কল্যাণদার দোকান, রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর, শান্তিনিকেতনে রামকৃষ্ণর দোকানের মতো বহু স্টলে হরপ্পা নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া অনলাইনে হরপ্পা বিক্রি হয়।
• পত্রিকা পেতে আপনি দপ্তরেও মেল করতে পারেন।
বৈদ্যুতিন পুস্তিকা
করোনার আক্রমণে অন্তরীণ অবস্থায় ১ বৈশাখ ১৪২৭ থেকে ‘হরপ্পা’-র বৈদ্যুতিন পুস্তিকা প্রকাশের সূচনা। এই পুস্তিকা নিজেদের ওয়েবসাইট, সামাজিক মাধ্যম, যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপে পাঠকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। দেখবেন চলুন...