সমাবেশে সমাবেশ দুটি গল্প
৩০ অগস্ট, ২০২০
সব কিছুতেই লুকিয়ে থাকে গল্প। এমনকি আমাদের গল্প নিয়েও আছে গল্প। এমন গপ্পে বাঙালি লকডাউনের কঠিন দিনগুলোতেও গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থা করার ফাঁকে-ফোকে শারীরিক দূরত্ব মেনে ছুতো খুঁজে চলে গল্প করার—রক-দাওয়া-চা-দোকানে নাহলেও ফোনাফুনির কানাকানিতে করে চলে বাতচিত-বাতেলা এবং নামান্তরে তাই গল্প। সেকথা স্মরণে রেখে বাঙালির গল্পের সনাতন কুঠুরি থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের কথা-ঐতিহ্যের চিরায়ত দুটি নমুনা প্রকাশিত হল শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত এই পুস্তিকায়। ...
পাঠ মানেই পাঠে-পাঠে কানাকানি। এতই অনিবার্য অনিবার ওই চলাচল যে অনেকসময় লেখকেরও খেয়াল থাকে না কখন সে ঘুমচালিত হয়ে অন্যের কোঠায় সিঁধ কেটে ঢুকে বেরিয়ে এসেছে। কখনও আবার সেয়ানা কেউ জেনেবুঝেই কর্জ-করা পরের স্বর তির্যকত প্রচ্ছন্ন রাখে স্ব-উদ্ভাবিত রচনায়। দ্বিতীয় গোত্রের লিখিয়েদেরই বহুৎ তারিফ, ভূয়সী প্রশংসা ক’রে গেছেন দশম শতকের কবি-নাট্যকার-সমালোচক রাজশেখর, সরস তাঁর নন্দনতাত্ত্বিক-সমীক্ষা কাব্যমীমাংসা গ্রন্থে। খোদ দেবভাষা, সংস্কৃতে ঢোল-শহরতে জানিয়েছেন তিনি: ‘এমন কোনো কবি নেই যে তস্কর নয়; এমন কোনো ব্যাপারী নেই যে ঠকবাজ নয়—তবে, এক তারই পসরা ফলে-ফুলে ফেঁপে ওঠে যে তার হরণ-কারবারের অন্ধিসন্ধি লুকোতে জানে’।
কাঁচামাল হিসেবে পরদ্রব্য ইস্তেমালে সফল, অতিথসেবায় আত্মীয়তা পাতানোয় দক্ষ, বিচক্ষণ প্রণেতার উপর কুম্ভিলকবৃত্তির মকদ্দমা টিকতেই পারে না সাহিত্যের আদালতে—অমনতরো মামলা শুধু সস্তা নকলিবাজিতে তুষ্ট, নিশ্চেষ্ট রচয়িতাদের বেলাতেই খাটে। এর কারণখানি খোলাখুলি বিবৃত কাব্যমীমাংসা-য়। তথায় একজায়গায় ধর্মপত্নী অবন্তীসুন্দরী-র উক্তি-বরাতে নিজের তত্ত্ব-আমানত বাড়াতে তৎপর রাজশেখর, স্ত্রীর আঁচল-আড়ালে বেশ দুঃসাহসীও। লিখতে আঙুল তাঁর আড়ষ্ট হয়নি, কাঁপেনি বুক: সৎ কবির ক্ষেত্রে জালজোচ্চুরির অপবাদ বেফায়দার, কেননা, অবন্তীসুন্দরীর জবানিতে, ‘ওই সকল মান্য প্রণম্যেরা আদৌ ছিঁচকে চোর নন, বরং, ডাকু-লুটেরা’।
এখানেই গেয়ে নেওয়া মঙ্গল, সমাবেশে সমাবেশ অন্তর্গত দুখানি গল্পই জাতবিচারে ধাতপ্রকারে সচেতনে দু-নম্বরি। চোরাই ধনের লেনদেনে অনবরত নিরত অধম এ লেখকের আশা, আর কারও না হোক, হাজার-অধিক বছরের ওপার হতে কবিবর রাজশেখরের আশিস-বরষে স্নিগ্ধ-নির্মল হবে সে।
গল্পদুটির প্রাথমিক খসড়া প্রস্তুত হয়েছিল বেশ ক’বৎসর আগে—‘হরবোলা’ ২০১৭-য়, ‘অনিকেত মিত্র ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ’ ২০০৫-এ। শ্লেষব্যঙ্গ-মিশ্র করুণরসের আখ্যান-জোড়ার আদিকড়চা আর এদের এখনকার অবয়বে প্রভেদ বিস্তর। তবে, হালআমলের বাংলায় পরিব্যাপ্ত বিস্মরণ-জীবাণুর মোকাবিলার সদিচ্ছাতেই হয়তো-বা, কাব্যমীমাংসক রাজশেখরের গোপনীয়তা রক্ষার সাধুউপদেশ খানিক অগ্রাহ্য ক’রে, গল্পজুটির অন্তে পাদটীকাবৎ ওদের উৎপত্তি বিষয়ে আবছা কটি ইশারা দিতে প্রলুব্ধ প্রবুদ্ধ হয়েছি।
অলঙ্করণ-শিল্পী শঙ্খ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুহৃদ সোমনাথ ঘোষ ও করোনা-র করালবেলায় নভাঞ্চলে ই-কেতাব ছড়িয়ে বাঙালিকে বিনোদন জোগাবার কারুআকাঙ্ক্ষায় বদ্ধপরিকর ‘হরপ্পা'-র সৈকত মুখার্জিকে শতকোটি ধন্যবাদ।
প্রকাশকাল: ৩০ অগস্ট, ২০২০
লিখন: শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রচ্ছদ-অলংকরণ: শঙ্খ বন্দ্যোাধ্যায়
শিল্প-নির্দেশনা: সোমনাথ ঘোষ
সম্পাদক: সৈকত মুখার্জি
গ্রাহক হোন
হরপ্পার গ্রাহক হতে গেলে বছরে তিনটি সংখ্যার জন্য মোট পাঁচশো টাকা দিতে হয়। (ডাকমাশুল আলাদা)
যোগাযোগ করুন ই-মেলে অথবা ফোনে কথা বলুন।
সরাসরি প্রাপ্তিস্থান
• হরপ্পার পরিবেশক পশ্চিমবঙ্গে অক্ষর প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলকাতা-৯ ও বাংলাদেশে বাতিঘর।
• কলেজস্ট্রিটে পাতিরাম, ধ্যানবিন্দু, দেজ, দে বুকস্টোর, উল্টোডাঙায়
সুনীলদার দোকান, রাসবিহারী মোড়ে কল্যাণদার দোকান, রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর, শান্তিনিকেতনে রামকৃষ্ণর দোকানের মতো বহু স্টলে হরপ্পা নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া অনলাইনে হরপ্পা বিক্রি হয়।
• পত্রিকা পেতে আপনি দপ্তরেও মেল করতে
পারেন।
মুদ্রিত সংখ্যা
হরপ্পার যাত্রা শুরু ২০১৭-র অক্টোবর মাসে চতুর্মাসিক পত্রিকা হরপ্পা লিখন চিত্রণ-এর প্রকাশলগ্নে। মূলত সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে হরপ্পা আত্মপ্রকাশ করে বাংলার
শিল্পসংস্কৃতি আচার অনুষ্ঠান রীতিনীতি পালাপার্বণ প্রভৃতি নানা বিষয়কে দু-মলাটের ভিতর নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার লক্ষ্যে। দেখবেন চলুন...