<Transparent Logo
Scroll down

rupang_dehi

রূপং দেহি
১০ অক্টোবর, ২০২৪

আজ এই উৎসবমুখর পরিবেশে ‘হরপ্পা’-র তরফ থেকে প্রকাশিত হল বৈদ্যুতিন পুস্তিকা ‘রূপং দেহি’। এটি অক্টোবর ২০২০ ‘দুর্গতিনাশিনী’ মুদ্রিত সংখ্যার রূপং দেহি, অংশের বৈদ্যুতিন সংস্করণ। ছ’জন গুণী শিল্পী তাঁদের দুর্গাপুজোর রূপদান-অভিজ্ঞতা সংকলিত করেছেন এ পুস্তিকায়। সেই স্মৃতিকথাগুলি এই শুভ মুহূর্তে পাঠকের কাছে তুলে ধরার এ এক সামান্য প্রয়াস। (ডাউনলোড)

কী আছে ভিতরে

গত ২০২০ ছিল এক সংকটকাল। ওই বছরের মার্চের শেষে গোটা দেশ স্তব্ধ হয়ে যায়, নিশ্চল হয় রেলের চাকা, বন্ধ হয় উড়োজাহাজের উড়ান, অনির্দিষ্টকালের জন্য সাধারণ জনজীবন হয়ে পড়ে স্তব্ধ। রাস্তায় বেরোলে মুখে বাঁধতে হত মুখোশ। রুজিরুটি বন্ধ হওয়ায় নিরাপত্তার তাগিদে নিজেদের ভিটেতে ফিরে আসতে থাকে কর্মসূত্রে রাজ্যের বাইরে-থাকা মানুষেরা। পথে বাস-ট্রেনের তলায় পড়ে মৃত্যুও হয় ক্লান্তিতে ডুবে-থাকা অনেকেরই। আবার অনেকেই তাদের কল্পিত নিরাপদ আশ্রয়ে এসে আপদে পরিণত হন, তাই পুনঃমুষিক ভব—এ সূত্র মেনে ফিরে যান অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে কর্মসংস্থানের ইঁদুর দৌড়ে। তাঁদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না, যেমন ছিল না মোমবাতি-জ্বালানো, থালা-বাজানো নাগরিকদের, যাঁরা নির্দেশ মেনে নির্দিষ্ট সময়ে কর্তব্যসম্পাদন করলেও কমেনি করোনা দাপট, দিন-দিন তা অঙ্কের নিরিখে বেড়েছিল। আর এই ফাঁকে গ্রীষ্ম-বর্ষা বিদায় নিয়ে এসেছিল শরৎ। শিউলি ফুটে ছিল, হিম-হিম সকালে প্রতি বছরের মতো ঘাসের আগায় চকচক করত শিশির, নদীর ধারে কাশবনেও দোলা লেগেছিল। এসেছিলেন দুর্গতিনাশিনী মা দুর্গাও। কিন্তু সবাই দ্বিধায় ছিলেন—ওই অর্থনৈতিক দোলাচলে, সংক্রমণের ঘনঘটায় পুজো করা উচিত হবে কিনা। না পুজো হয়েছিল। যেমন হুতোম বলেছিলেন— “বার জন একত্র হয়ে কালী বা অন্য দেবতার পূজা করার প্রথা মড়ক হতেই সৃষ্টি হয়—"। অথবা পাড়ায় কোনো অঘটন ঘটলে মাতব্বর গোছের কিছু লোক বারোয়ারি রক্ষেকালী পুজো করেন—দোরে-দোরে ঘুরে চাঁদা তুলে। তবে ওই পুজোর আয়োজন কিংবা থালা বাজিয়ে বা প্রদীপ জ্বালিয়ে রোগ তাড়ানো কোনো দৈবসূত্র নয়। দুর্গাপুজো আপামর বাঙালির কাছে যতটা-না ধর্মীয় অনুষ্ঠান তার থেকে অনেক বেশি মিলনের উৎসব। তার থেকেও অনেক বেশি বহু মানুষের অর্থনৈতিক উপার্জনের মূলসূত্র। পুজো শব্দটা সঙ্গে বাঁধা থাকলেও সেখানে সাম্প্রদায়িক বাড়াবাড়িটা কম। পুজোয় যেমন সকলেই সামর্থ্য অনুযায়ী চাঁদা দেন, তেমনি অংশও নেন মন খুলে। শারদোৎসব আমআদমির কাছে একটা যজ্ঞও বটে। মন্ত্রতন্ত্র কতটা তা-তে আছে না-জানলেও বলতে পারি এ যজ্ঞ জঠরের যজ্ঞ। এই পুজোর দিকে তাকিয়ে বছরভর বসে থাকে বহু মানুষ। সারা বছর টুকিটাকি রোজগারের উপায় থাকলেও পুজোর সময়ের উপার্জনই হল তাদের বলভরসা। যেমন গোটা বছরধরে নানা প্রতিমার বায়না নিলেও, কুমোর চিটমাটি আর বেলেমাটিতে খড় বা পাট মিশিয়ে নিজের শিল্পদক্ষতার শীর্ষে পৌঁছতে চান মহাপুজোর মরশুমে। সারা বছর টুকিটাকি সেলাই করে অনলাইন আর রেডিমেডের যুগে সংসার-টানা পাড়ার দরজি ভরসা রাখেন পুজোর অর্ডারেই। এভাবেই প্যান্ডেল-ডেকরেটার, ফুটপাতের হকার, প্রসাধনবিক্রেতা, পার্লারের মালিক সকলেরই অর্থনৈতিক দুর্গতিনাশিনী যেন এই উৎসব। এমনকি যে-ছেলেটা রোজ সকালে বাড়িতে-বাড়িতে কাগজ দেয়, সে-ও ভাবে একটা পুজোবার্ষিকী যদি গুঁজে দেওয়া যায় খবরের কাগজের সঙ্গে, তবে পার্বণের সময়ে কিছুটা আর্থিক সুরাহা হয়। এমনই অর্থবহ এবং অর্থ-বাহী উৎসব কোনো বছর না হলে কী হতে পারে তা সংবেদনশীল পাঠক অনুমান করুন। ‘নিউ নরমাল'-এ মানিয়ে নেওয়া নাগরিককুল অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করে সেবছর তাই পুজো করেছিল—সেকথা অবশ্য সবারই জানা। সে সংকটকালে দুর্গতিনাশিনীর উদ‍্যাপনকে স্মরণ করতে প্রকাশিত হল ‘হরপ্পা লিখন চিত্রণ’-এর অক্টোবর ২০২০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত সংখ্যা থেকে গৃহীত ছ’টি নিবন্ধের বৈদ্যুতিন সংস্করণ ‘রূপং দেহি’ শিরোনামে। নিবন্ধগুলিতে সংকলিত হয়েছে ওই সংকটকালে ছ’জন বিশিষ্ট শিল্পীর পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং কীভাবে তাঁরা ওই সংকটকালে দেবীবন্দনার আয়োজনে বহু মানুষের জীবিকার সুযোগের সূত্র খুঁজছেন। সেসংকট আমরা অতিক্রম করলেও কাটেনি পৃথিবীর গভীর অসুখ। তাই আবার আজকে আমরা ফিরে দেখতে চাইছি। ব্যাধিনাশিনীর কাছে প্রার্থনা করছি—সকলে সুস্থ থাক, শান্তি বর্ষিত হোক চরাচরে— রূপং দেহি যশো দেহি... দ্বিষো জহি

ডাউনলোড করুন

প্রকাশকাল: ১০ অক্টোবর, ২০২৪

প্রচ্ছদ ও শিল্প-নির্দেশনা: সোমনাথ ঘোষ

বিশেষ সহযোগিতা: সৌম্যদীপ

সম্পাদক: সৈকত মুখার্জি

গ্রাহক হোন
হরপ্পার গ্রাহক হতে গেলে বছরে দুটি সংখ্যার জন্য মোট আটশো টাকা দিতে হয়। (ডাকমাশুল আলাদা)
যোগাযোগ করুন ই-মেলে অথবা ফোনে কথা বলুন।

সরাসরি প্রাপ্তিস্থান
• হরপ্পার পরিবেশক পশ্চিমবঙ্গে অক্ষর প্রকাশনী, ১৮এ টেমার লেন, কলকাতা-৯ ও বাংলাদেশে বাতিঘর।
• কলেজস্ট্রিটে পাতিরাম, ধ্যানবিন্দু, দেজ, দে বুকস্টোর, উল্টোডাঙায় সুনীলদার দোকান, রাসবিহারী মোড়ে কল্যাণদার দোকান, রিড বেঙ্গলি বুক স্টোর, শান্তিনিকেতনে রামকৃষ্ণর দোকানের মতো বহু স্টলে হরপ্পা নিয়মিত পাওয়া যায়। এছাড়া অনলাইনে হরপ্পা বিক্রি হয়।
• পত্রিকা পেতে আপনি দপ্তরেও মেল করতে পারেন।

মুদ্রিত সংখ্যা
হরপ্পার যাত্রা শুরু ২০১৭-র অক্টোবর মাসে চতুর্মাসিক পত্রিকা হরপ্পা লিখন চিত্রণ-এর প্রকাশলগ্নে। মূলত সাহিত্য পত্রিকা হিসেবে হরপ্পা আত্মপ্রকাশ করে বাংলার শিল্পসংস্কৃতি আচার অনুষ্ঠান রীতিনীতি পালাপার্বণ প্রভৃতি নানা বিষয়কে দু-মলাটের ভিতর নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরার লক্ষ্যে। দেখবেন চলুন...